বদনাম করতে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছিল হিন্দুত্ববাদী এবিভিপি, চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দুই প্রাক্তন ছাত্রনেতার - Barak Bangla News

Breaking

Jan 19, 2019

বদনাম করতে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছিল হিন্দুত্ববাদী এবিভিপি, চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দুই প্রাক্তন ছাত্রনেতার

জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের প্রথম সারির দুই প্রাক্তন ছাত্রনেতা চাঞ্চল্যকর দাবি তুললেন। আফজাল গুরুর ফাঁসির প্রতিবাদে ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জেএনইউয়ের ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রতিবাদ সভা করেছিলেন, সেখানে ভারত বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অপরাধে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ এই ছাত্রদের ঘাড়ে ছাপানো হয়েছে।  কিন্তু আদতে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সমর্থক ছাত্ররাই যে দেশ বিরোধী স্লোগান তুলেছিলেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ এর প্রাক্তন ছাত্রনেতা স্বীকার করে নিলেন।  সাংবাদিক সম্মেলন করে জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রাক্তন ছাত্র নেতা যতীন গোরাইয়া ও প্রদীপ নারওয়াল অভিযোগ করেছেন, ৯ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সমাবেশের দিন ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছিলেন যারা- সকলে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ এর সমর্থক। যতীন ছিলেন সংগঠনের ভাইস- প্রেসিডেন্ট আর প্রদীপ জয়েন্ট সেক্রেটারি।
যতীন ও প্রদীপ দাবি করেছেন,তাদের কাছে সাবুদ হিসাবে রয়েছে জেএনইউ চরত্বে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ সমাবেশের ভিডিও ফুটেজে। ওই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে সমস্ত পড়ুয়ারা ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলেছেন, তারা সকলেই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। এছাড়া ওই স্লোগান তুলেছেন সংগঠনের প্রতি সহানুভূতিশীল পড়ুয়াদের একাংশ।
এই দাবিকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। জেএনইউ চরত্বে যে ছাত্র বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়,সেখানে দেশ বিরোধিতা করার দায়ে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা আনা হয়েছে জেএনইউয়ের ছাত্র কানাইয়া কুমার, ওমর খালিদ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্য সহ কয়েকজন কাশ্মীরি ছাত্রদের বিরুদ্ধে। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের প্রাক্তন দুই ছাত্রনেতার দাবিকে ঘিরে বিতর্ক তাই স্বভাবতই দানা বেঁধেছে।
সূত্রে খবর, জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন যতীন গোরাইয়া এবং তৎকালীন জয়েন্ট সেক্রেটারি প্রদীপ নারওয়াল। সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদের জেরে তারা ইস্তফা দেন। যতীন ও প্রদীপ দুজনেই দলীত সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। ওরা জানিয়েছেন, জেএনইউয়ের দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনা থেকে মানুষের নজর ঘোরানোর জন্য তাদের নির্দেশ দিয়েছিল দলীয় নেতৃত্ব। এজন্য তাদের টেলিভিশন শোতে অংশগ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। দুজনেই দলিত সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হওয়ায় দলীয় নেতৃত্ব তাদের প্রতি এই নির্দেশ চাপিয়েছিল এই অভিযোগ যতীন ও প্রদীপের।
প্রাক্তন ছাত্রনেতা যতীন ও প্রদীপ জানিয়েছেন, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ আত্মঘাতী দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার ঘাড়ে জঙ্গি তকমা চাপাচ্ছিল। এ নিয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল এও ওরা দাবি করেছেন।
তবে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ সংগঠনের প্রাক্তন দুই ছাত্রনেতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন জয়েন্ট সেক্রেটারি সৌরভ শর্মা বলেছেন, যতীন ও প্রদীপ কংগ্রেসের যোগ দিয়েছেন। ওরা মিথ্যা প্রচার করছেন।

No comments: