বরাক বাংলা নিউজ প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাহজাহান উতুপুলং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে প্রেরিত বার্তায় রোহিঙ্গাদের উপর চলা অমানবিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। মায়ান্মার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বলি হয়ে আসা লক্ষাধিক শরণার্থী বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।পলিথিনের ছাউনি দিয়ে গিঞ্জির মত ঘর বানিয়ে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে এক দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে এই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। অনেকের গায়ে গুলির তাজা জখম,শরীরে পুড়ার দাগ,রড দিয়ে মেরে আহত করার চিহ্ন যে কোনও সুস্থ বিবেকের মানব হৃদয়কে নিশ্চয় বিচলিত করে তুলবে।মহিলা থেকে শিশু পর্যন্ত কেউ বাদ যায়নি এই অমানবিক নির্যাতন থেকে।আমাদের প্রতিনিধি সব কয়টি তাবুতে ঘুরে ঘুরে এদের করুন এই অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। অনেক মহিলা কান্নাভেজা কন্ঠে নিজেদের ছেলে হারানো, মেয়ে হারানো, স্বামী হারানোর করুন ঘটনা তুলে ধরেন। বাবার সামনে মেয়েকে ধর্ষণ করে রড দিয়ে পেটায় নির্মম মায়ানমার সেনা।এক গর্ভবতী মহিলা যার স্বামী,শশুর ও নিজের ছোট্ট শিশুকে মেরে তাকে ধর্ষণ করে। কোনও মতে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।সীমান্তের ওপারে এসে এক মৃত শিশুর জন্ম দেন ওই নির্যাতিতা মহিলা। তার গায়েও পুড়ার দাগ।একটি পাঁচ বছরের শিশু যার পায়ে তাজা গুলির দাগ, নাভিদেশ থেকে নীচ পর্যন্ত আগুনে পোড়া। সত্তর থেকে আশি বছর বয়সের বৃদ্ধদের গায়েও আঘাতের চিহ্ন।একটি তাবুতে প্রায় পনেরো থেকে বিশজন মহিলা একত্রে দিন যাপন করেন। অনর্গল কাঁদছেন যাদের ঘরের একজনও পুরুষ বেঁচে নেই। সবাইকে হয় গুলি করে নতুবা পুড়িয়ে মারা হয়েছে।আমাদের প্রতিবেদকের সাথে কথা বলার সময় প্রায় সবাই এক বাক্যে বলেছেন মায়ান্মার তাদের দেশ, রাখাইন তাদের রাজ্য। নিজেদের দেশ ও ভিটে মাটির প্রসঙ্গ তুলতেই অনেকে অশ্রুতপূর্ব নয়নে কেঁদে উঠেছেন। নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেলে তারা আবারও তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে চান। তারা বাংলাদেশ সরকার সহ জনগণের কৃতজ্ঞতা ও স্বীকার করে বলেন এই সরকার তাদের আশ্রয় না দিলে তারাও মারা পড়তেন।বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ দলে দলে এসে তাদের খোঁজ নিচ্ছেন এবং ত্রাণ সামগ্রী বন্টন করছেন।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছে।আমদের বরাক বাংলা প্রতিনিধি এসব করুন দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী কাল আবারও এই শিবির পরিদর্শন করে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় দুতাবাসে গিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দ্যেশ্যে স্মারকপত্র প্রদান করবেন, যাতে করে আন্তর্জাতিক শরণার্থী ত্রাণ চুক্তির অধীনে ভারত সরকার এই ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয় এবং মানবতার স্বার্থে ও ভারতবর্ষের যুগ যুগান্তের উদারতার ভাবমূর্তিকে অক্ষুন্ন রাখতে এই নির্যাতিত মানুষের পাশে দাড়াক এবং ত্রাণ পাঠানোর উদ্দ্যোগ নিক।
1 comment:
Lot of tnxx bangla news
Post a Comment