জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) থেকে বহু নারী ও শিশুর নাম উপযুক্ত তদন্ত ছাড়াই বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আসামের বিধায়ক শেরমান আলী আহমেদ। বরপেটা জেলার এই কংগ্রেস বিধায়ক বলেন, ‘জাতীয় নাগরিকপঞ্জির খসড়ায় যে চল্লিশ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে, তারা কীভাবে বাদ পড়ল, এরা সত্যি সত্যি বিদেশি না ভারতীয়; সেসম্পর্কে আমার মন্তব্য হল, নাগরিকপঞ্জি প্রস্তুতকরণের সময় বিভিন্ন তদন্তপর্বে যথাবিহিত নিয়মমাফিক তারা (এনআরসি কর্তৃপক্ষ) কাজ পরিচালনা করেনি। দেখা গেছে, বেশিরভাগ নারীদের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, যেসব শিশুরা স্কুলে যায়নি এবং স্কুলে গেলেও মেট্রিক পাস করেনি তাদের নাম বাদ পড়েছে। এর কারণ হল, নারীরা আজকের দিনেও বরপেটার চরাঞ্চলে সাক্ষরতার হার হল মাত্র ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ ৮৩ শতাংশ আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নিরক্ষর, ধুবড়ির চরাঞ্চলে মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ সাক্ষর অর্থাৎ প্রায় ৮৭ শতাংশ মানুষ আজকের দিনেও নিরক্ষর। একইভাবে গোয়ালপাড়ার ১৫ শতাংশ মানুষ সাক্ষর হওয়ায় এখানে ৮৫ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর। নারীরা বাদ পড়ার প্রধান কারণ হল, তারা কোনোদিন স্কুল-কলেজে যায়নি, তাদের জন্ম প্রমাণপত্র (বার্থ সার্টিফিকেট) নেই। ভারতে সব মানুষের জন্ম প্রমাণপত্র নেই। পিছিয়েপড়া অনগ্রসর মানুষের বেশিরভাগেরই জন্ম প্রমাণপত্র নেই।’
শেরমান আলী আহমেদ আরও বলেন, ‘যেভাবে নারী ও শিশুদের নাম বা দেয়া হয়েছে তাতে ধারণা হয়, তাহলে কী আসামের পুরুষদের বিয়ে করার মত উপযুক্ত নারী কী এদেশে নাই? তারা কী সব বাংলাদেশি নারীদেরকে এনে বিয়ে করেছে? না তাদের সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা নেই বলে বাংলাদেশ থেকে শিশুদের এখানে এনেছে?’ তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে যারা স্কুলে যায়নি, যাদের জন্ম প্রমাণপত্র নেই, অথবা যারা মেট্রিক পাস করেনি, বোর্ডের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমাণপত্র দাখিল করতে পারেনি তাদেরকে এনআরসি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এমনও অনেক ঘটনা আছে যে, মা-বাবা দু’জনের নাম নথিভুক্ত হলেও তাদের ছোট ছোট সন্তান যারা জন্ম প্রমাণপত্র দিতে পারেনি, স্কুলের প্রমাণপত্র দিয়েছে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে!
No comments:
Post a Comment