গুরমিত রাম রহিম সিং - Barak Bangla News

Breaking

Aug 25, 2017

গুরমিত রাম রহিম সিং

বরাক বাংলা ডেস্ক: তিনি ধর্মীয় সংগঠন ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান। পুরো নাম গুরমিত রাম রহিম সিং। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই পরিচিত নন। তিনি সিনেমার পর্দায় নায়ক, তিনি গায়ক, তিনি পরিচালক। আবার সমাজ সংস্কারকও বটে। স্বঘোষিত ধর্মগুরু থেকে সিনেমার নায়ক, দেখে নেওয়া যাক কে এই রাম রহিম সিং।

১৯৬৭ সালের ১৫ অগাস্ট রাজস্থানের শ্রীগুরুসর মোদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রাম রহিম। তাঁর বাবা মাঘহর সিং ছিলেন জমিদার। ছোটো থেকেই বাবার সঙ্গে জমি জমা দেখাশোনার কাজ করতেন রাম রহিম।
তাঁর অনুগামীদের দাবি অনুযায়ী, রাম রহিম ছোটো থেকেই আধ্যাত্মিক ছিলেন। ছোটোবেলাতে তাঁকে নিজের আশ্রমে নিয়ে যান শাহ সতনাম সিং। তিনি ছিলেন ডেরা সাচ্চা সৌদা সংগঠনের সেই সময়ের প্রধান। ১৯৯০ সালে সতনাম সিং নিজের অনুগামীদের উদ্দেশে জানান, রাম রহিম সিং হবেন তাঁর উত্তরসূরি। এজন্য সারা ভারত থেকে ভক্তদের ডেকে আনা হয়।
                      পরে হরমিত কৌর নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন রাম রহিম। তাঁদের তিন মেয়ে ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে তিনি সিনেমা প্রযোজনা ও তাতে অভিনয়ের কাজে যোগ দেন। এ পর্যন্ত তাঁর ৫ টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। তার মধ্যে 'মেসেঞ্জার অফ গড' সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তাঁর ছবির বক্স অফিস কালেকশন অনেক সময়ই যেকোনও তাবড় বলিউডের অভিনেতার সিনেমাকে ছাপিয়ে যায়।
                    ২০০২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়িকে গোপন চিঠির মাধ্যমে রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন এক সাধ্বী। তবে শুধু নিজের কথাই নয়, ডেরার আরও অনেক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে চিঠিতে জানান তিনি।

ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ওই ঘটনায় CBI তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০০২ সালেই সাংবাদিক রাম চন্দর ছত্রপতিকে খুনের অভিযোগ ওঠে রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে। সাংবাদিক রাম চন্দর ছত্রপতি সেইসময় রাম রহিম সিংকে নিয়েই লেখালেখি করতেন। এছাড়াও ডেরা সাচ্চা সৌদার ম্যানেজার রঞ্জিৎ সিংকেও খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে চিঠির সূত্র ধরে বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।

তদন্তে ১৮ জন সাধ্বীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে CBI। তাঁদের মধ্যে ২ জন ধর্ষিত হওয়ার কথা স্বীকার করেন। এক সাধ্বী বলেন, রাম রহিম তাঁদের বলেছিল, “ধর্ষণ ন্যায়সঙ্গত। কারণ এতে তাঁরা শুদ্ধ হবেন।” দুই মহিলা গোপন জবানবন্দী দেন।

গোপন জবানবন্দীতে এক মহিলা বলেন, “তিনি ডেরা প্রধানের চেম্বারে ঢোকার পরই দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি দেখেন রাম রহিম বড় স্ক্রিনে পর্নোগ্রাফি ছবি দেখছেন।”

২০০৮ সালে রাম রহিমের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শুরু হয়। সেই বছরেই বিশেষ CBI আদালতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ও ৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়।

যদিও আদালততে সব অভিযোগই অস্বীকার করেন তিনি। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, তিনি যৌন সম্পর্কে রাজি না হওয়াতেই তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ ওঠার দীর্ঘ ১৫ বছর পর ধর্ষণের মামলায় আজ রাম রহিমকে দোষীসাব্যস্ত করল বিশেষ CBI আদালত।
__________________
সূত্র ও সংকলন :- অন্তর্জালিকা

No comments: