জীবনটা একেবারে আটপৌরেভাবেই শুরু। মানিক সরকারের মতো তাঁরও শৈশব কেটেছে অধুনা গোমতী জেলার উদয়পুরে। উদয়পুরের জামজুরিতে জন্ম তাঁর। সেখান থেকে পড়াশোনা স্কুল-কলেজ শেষ করে উড়ে যান দিল্লি। ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা বা অন্য কিছু করার। দিল্লিতেই থেকে যান। প্রথমে আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কিছুদিন কাজ করার পরই নজরে এসে যান কে এন গোবিন্দাচার্যের। অনেকে বলেন, আজকের বিপ্লব আসলে গোবিন্দাচার্যেরই হাতে গড়া। দিল্লিতেই স্থায়ীভাবে থেকে যান। আর পাঁচজন দিল্লিপ্রবাসী বাঙালির হিন্দিতে বাংলার টান থাকলে কী হবে, বিপ্লবের ঠিক উল্টো। তাঁর বাংলাতেও চলে আসে হিন্দির টান। দিল্লিতে থাকতে থাকতেই ব্যাঙ্ক অফিসার নীতি দেবের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। জিম ইনস্ট্রাক্টর বিপ্লবের দুটি সন্তানও জন্মায় দিল্লিতে। ছেলে আর্য মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মেয়েও পড়াশোনা করছে দিল্লিতে। বিপ্লবের স্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তাঁকে বদলি করলে তিনি ত্রিপুরায় আসতে ইচ্ছুক। ১৯৯৯-এর স্নাতক বিপ্লব অবশ্য টানা ১৭ বছর দিল্লির প্রবাস কাটিয়ে রাজ্যে ফেরেন বছর আড়াই আগে। তাঁর বড় নির্ভর ত্রিপুরা বিজেপি-র দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল দেওধর। 'একলা চলো রে' আওড়াতে আওড়াতে বিপ্লব চষে বেড়িয়েছেন গোটা রাজ্য। অনেকেই আবডালে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও করতেন। ২০১৬-র ৭ জানুয়ারি তাঁকে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি করা হয়। সে নিয়েও ছিল হরেক ব্যঙ্গোক্তি। শনিবার শেষ হাসি হাসলেন তিনিই। বুঝিয়ে দিলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর ওপর আস্থা রেখে ভুল করেননি। ৪৮ বছর বয়সী বিপ্লব হতে চলেছেন দেশের সবচেয়ে প্রশংসিত ও স্বচ্ছ মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরসূরি। মানিক সরকারও এই বয়সেই নৃপেন চক্রবর্তী-দশরথ দেবদের উত্তরসূরি হয়েছিলেন। নভেম্বরে জন্ম, বিয়েও নভেম্বরে। নামটাও বিপ্লব। এখন দেখার, বসন্তে গেরুয়া সমীরণে ক্ষমতায় বসে পূর্বসূরিকে টেক্কা দিতে পারেন কি না। তাঁর ছোট্ট কথা- 'সক্কলের আশীর্বাদ চাই। চাই সহযোগিতা। সক্কলের।'
No comments:
Post a Comment